গাঁজা কি? মানব দেহে গাঁজার ক্ষতিকর প্রভাব

  • সম্পাদকীয়
  • প্রকাশের সময় : ১১:২৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • ৬৫ বার পঠিত

গাঁজা একটি মাদক।এবং ভয়াবহ ক্ষতিকর মাদক।গাঁজা’র প্রভাব শুধু মস্তিষ্কে নয়, পুরো শরীরে প্রভাব ফেলে।
গাঁজা বা মারিওয়ানা বলতে শুকনো ফুল এবং স্ত্রী গাঁজা উদ্ভিদের কচি পাতা ও ডালপালাকে বুঝায়।
গাঁজা, সাধারণত মারিওয়ানা,গুঞ্জি, গাঞ্জা,সিদ্ধি,সবজি,ইত্যাদি নামে পরিচিত মূলত গাঁজা উদ্ভিদের এক ধরনের পুস্প, যা সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয় হয়েছিল। ফার্মাকোলজিক্যালি, গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান হল টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি); এটি উদ্ভিদের ৪৮৩টি পরিচিত যৌগের ১টি, এছাড়াও ৮৪টি অন্যান্য ক্যানাবিনোয়েড্‌স রয়েছে, যেমন ক্যানাবিডিওল (সিবিডি), ক্যানাবিনল (সিবিএন), টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিভারিন (টিএইচসিভি) এবং ক্যানাবিগেরো (সিবিজি)। গাঁজা সাধারণত ধূমপান, বাষ্পীকরণ, খাবারের মধ্যে মিশ্রণ, এবং নির্যাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

গাঁজার সেবনের সাইকোঅ্যাক্টিভ এবং শারীরবৃত্তীয় নানান প্রভাব রয়েছে। গাঁজার তাৎক্ষণিক গ্রাসকারী প্রভাবের মধ্যে শিথিলায়ন এবং হালকা রমরমা মেজাজ অন্তর্ভুক্ত (“উচ্চ” বা “স্টোন্ড” অনুভূতি), কিছু তাৎক্ষণিক অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে স্মৃতি হ্রাস, মুখগহ্বর শুষ্কতা, অনভিজ্ঞ করে তোলা, চোখ লাল হওয়া প্রভৃতি। পাশাপাশি বোধ এবং মেজাজ বা মানসিক অবস্থার বিষয়ী পরিবর্তন, সর্বাধিক সাধারণ স্বল্পমেয়াদী শারীরিক ও স্নায়বিক প্রভাবের মধ্যে হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, ক্ষুধা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ, উচ্চ রক্তচাপ, স্বল্পমেয়াদী এবং কর্ম স্তৃতির অবনতি, মানসিক সমন্বয় এবং একাগ্রতা অর্ন্তভূক্ত।

নিয়মিত এবং বেশি মাত্রায় গাঁজা জাতীয় দ্রব্য সেবনে গাঁজা সাইকোসিস নামে একধরনের লক্ষন হয়। এতে চোখে রক্তজমে চোখ লাল হয়ে যায়, ক্ষুধামন্দা, নির্জিবতা, শরীরের মাংস-পেশী শুকিয়ে যাওয়া, অত্যধিক দুর্বলতা, হাত-পা অনবরত কাপতে থাকা, পুরুষত্বহীনতা থেকে শুরু করে পুরোপুরি মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।

ধূমপানের মাধ্যমে সেবনে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রভাবগুলির সূচনা হয়, অন্যদিকে রান্না করে খাওয়া হলে প্রায় ৩০ থেকে ৬০ মিনিট এর প্রভাব উপলব্ধ করা যায়। উভয় ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পাঁচ-ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।

গাঁজা সেবনে মানুষ মানসিক রোগী বা পাগল হয়ে গেছে এমন অনেক নজির রয়েছে, গাঁজা ধীরে ধীরে মানুষের ভিতরে তসনস করে। গাঁজা মাদকের বিরুদ্ধে তিব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন মহল ও পারিবারিক ভাবে মাদকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা এখন সময়ের দাবি।

পর্ব-২ এ থাকছে গাঁজা হতে পরিত্রাণ,বা গাঁজার নেশা ছেড়ে দেয়ার কিছু বৈজ্ঞানিক আলোচনা।
ছবি-অনলাইন হতে নেয়া

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয়

ক্রিস্টাল আইস ও হেরোইন সহ ১ জন কে গ্রেফতার করেছে বিজিবি

গাঁজা কি? মানব দেহে গাঁজার ক্ষতিকর প্রভাব

প্রকাশের সময় : ১১:২৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

গাঁজা একটি মাদক।এবং ভয়াবহ ক্ষতিকর মাদক।গাঁজা’র প্রভাব শুধু মস্তিষ্কে নয়, পুরো শরীরে প্রভাব ফেলে।
গাঁজা বা মারিওয়ানা বলতে শুকনো ফুল এবং স্ত্রী গাঁজা উদ্ভিদের কচি পাতা ও ডালপালাকে বুঝায়।
গাঁজা, সাধারণত মারিওয়ানা,গুঞ্জি, গাঞ্জা,সিদ্ধি,সবজি,ইত্যাদি নামে পরিচিত মূলত গাঁজা উদ্ভিদের এক ধরনের পুস্প, যা সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয় হয়েছিল। ফার্মাকোলজিক্যালি, গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান হল টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি); এটি উদ্ভিদের ৪৮৩টি পরিচিত যৌগের ১টি, এছাড়াও ৮৪টি অন্যান্য ক্যানাবিনোয়েড্‌স রয়েছে, যেমন ক্যানাবিডিওল (সিবিডি), ক্যানাবিনল (সিবিএন), টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিভারিন (টিএইচসিভি) এবং ক্যানাবিগেরো (সিবিজি)। গাঁজা সাধারণত ধূমপান, বাষ্পীকরণ, খাবারের মধ্যে মিশ্রণ, এবং নির্যাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

গাঁজার সেবনের সাইকোঅ্যাক্টিভ এবং শারীরবৃত্তীয় নানান প্রভাব রয়েছে। গাঁজার তাৎক্ষণিক গ্রাসকারী প্রভাবের মধ্যে শিথিলায়ন এবং হালকা রমরমা মেজাজ অন্তর্ভুক্ত (“উচ্চ” বা “স্টোন্ড” অনুভূতি), কিছু তাৎক্ষণিক অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে স্মৃতি হ্রাস, মুখগহ্বর শুষ্কতা, অনভিজ্ঞ করে তোলা, চোখ লাল হওয়া প্রভৃতি। পাশাপাশি বোধ এবং মেজাজ বা মানসিক অবস্থার বিষয়ী পরিবর্তন, সর্বাধিক সাধারণ স্বল্পমেয়াদী শারীরিক ও স্নায়বিক প্রভাবের মধ্যে হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, ক্ষুধা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ, উচ্চ রক্তচাপ, স্বল্পমেয়াদী এবং কর্ম স্তৃতির অবনতি, মানসিক সমন্বয় এবং একাগ্রতা অর্ন্তভূক্ত।

নিয়মিত এবং বেশি মাত্রায় গাঁজা জাতীয় দ্রব্য সেবনে গাঁজা সাইকোসিস নামে একধরনের লক্ষন হয়। এতে চোখে রক্তজমে চোখ লাল হয়ে যায়, ক্ষুধামন্দা, নির্জিবতা, শরীরের মাংস-পেশী শুকিয়ে যাওয়া, অত্যধিক দুর্বলতা, হাত-পা অনবরত কাপতে থাকা, পুরুষত্বহীনতা থেকে শুরু করে পুরোপুরি মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।

ধূমপানের মাধ্যমে সেবনে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রভাবগুলির সূচনা হয়, অন্যদিকে রান্না করে খাওয়া হলে প্রায় ৩০ থেকে ৬০ মিনিট এর প্রভাব উপলব্ধ করা যায়। উভয় ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পাঁচ-ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।

গাঁজা সেবনে মানুষ মানসিক রোগী বা পাগল হয়ে গেছে এমন অনেক নজির রয়েছে, গাঁজা ধীরে ধীরে মানুষের ভিতরে তসনস করে। গাঁজা মাদকের বিরুদ্ধে তিব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন মহল ও পারিবারিক ভাবে মাদকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা এখন সময়ের দাবি।

পর্ব-২ এ থাকছে গাঁজা হতে পরিত্রাণ,বা গাঁজার নেশা ছেড়ে দেয়ার কিছু বৈজ্ঞানিক আলোচনা।
ছবি-অনলাইন হতে নেয়া