যথাযথ মর্যাদায় আগামীকাল ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে এমন বার্তা জানানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করবেন।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা আগামী ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়াও তিন বাহিনী প্রধানগণ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সাথে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীগণ’কে সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়েরউপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ হতে ২১ নভেম্বর বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে থাকবেন প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিগণ, প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টাগণ, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতগণ, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ, বিচারপতিগণ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মূখ্য সচিব, বাহিনীত্রয়ের প্রাক্তন প্রধানগণ, প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তাগণ, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কগণ, স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীগণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ।
উক্ত অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাঁটসমূহে অবস্থান/নোঙ্গরকৃত অবস্থায় রাখা হবে।
২০ নভেম্বর (বুধবার) সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বাংলাদেশ বেতার আগামী ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দূর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে আগামী ২১ নভেম্বর বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।