কুড়িগ্রামে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আসামী হলেন সাংবাদিক

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলাতে মাদক বিরোধী অভিযানের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মামলার আসামী হয়েছেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ঘোষণা পত্রিকার প্রতিনিধি খালেদ হাসান।

গত রোববার (৫ জানুয়ারি) উপজেলার বাবুরহাট এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চালায় ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সাংবাদিক খালেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

পুলিশ অভিযান শেষে মাদক কারবারি হাফিজুর ও তার স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তুললে, এলাকাবাসী বাধা দিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয়।

পরে পুলিশ আসামীদের আটক করতে না পেরে থানায় ফেরত আসে এবং হাফিজুরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় এলাকাবাসীকে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক খালেদ হাসানকে ৬ নম্বর আসামী করা হয়।

সাংবাদিক খালেদ হাসান জানান, “মাদক বিরোধী অভিযানের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকি। এ সময় মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য ভিডিও ধারণে বাধা দেয় ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি সেখান থেকে কৌশলে ফিরে আসি। পরে জানতে পারি আমাকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে জনসচেতনতা তৈরির কাজ করি। অথচ সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি। আমি এই ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার ও প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি এ এস খোকন বলেন, “তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক খালেদ হাসান নিজেই আসামী হয়েছেন, যা দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও মাইটিভি প্রতিনিধি মাইদুল ইসলাম মুকুল বলেন, “একজন সাংবাদিকের নামে এমন অভিযোগের সঠিক তদন্ত জরুরি। কোন নির্দোষ সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”

পুলিশের বক্তব্য:
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তাধীন রয়েছে। সাংবাদিকের সংশ্লিষ্টতা না থাকলে তিনি আইনি সহায়তা পাবেন।”

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

কুড়িগ্রামে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আসামী হলেন সাংবাদিক

প্রকাশের সময় : ০৪:২৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলাতে মাদক বিরোধী অভিযানের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মামলার আসামী হয়েছেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ঘোষণা পত্রিকার প্রতিনিধি খালেদ হাসান।

গত রোববার (৫ জানুয়ারি) উপজেলার বাবুরহাট এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চালায় ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সাংবাদিক খালেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

পুলিশ অভিযান শেষে মাদক কারবারি হাফিজুর ও তার স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তুললে, এলাকাবাসী বাধা দিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয়।

পরে পুলিশ আসামীদের আটক করতে না পেরে থানায় ফেরত আসে এবং হাফিজুরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় এলাকাবাসীকে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক খালেদ হাসানকে ৬ নম্বর আসামী করা হয়।

সাংবাদিক খালেদ হাসান জানান, “মাদক বিরোধী অভিযানের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকি। এ সময় মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য ভিডিও ধারণে বাধা দেয় ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি সেখান থেকে কৌশলে ফিরে আসি। পরে জানতে পারি আমাকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে জনসচেতনতা তৈরির কাজ করি। অথচ সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি। আমি এই ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার ও প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি এ এস খোকন বলেন, “তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক খালেদ হাসান নিজেই আসামী হয়েছেন, যা দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও মাইটিভি প্রতিনিধি মাইদুল ইসলাম মুকুল বলেন, “একজন সাংবাদিকের নামে এমন অভিযোগের সঠিক তদন্ত জরুরি। কোন নির্দোষ সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”

পুলিশের বক্তব্য:
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তাধীন রয়েছে। সাংবাদিকের সংশ্লিষ্টতা না থাকলে তিনি আইনি সহায়তা পাবেন।”