ফেনসিডিল তৈরির উপাদান হিসেবে মূলত ৩টি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এগুলো হচ্ছে (১) কোডিন ফসফেট (২) প্রমিথিজিন হাইড্রোক্লোরাইড ও (৩) ইফিড্রিন হাইড্রোক্লোরাইড। এর মধ্যে কোডিন ফসফেট হচ্ছে মরফিন -প্যাথেডিন গ্রুপের সিনথেটিক ডেরিভেটিভ এবং এটিতেই রয়েছে নেশার উপাদান।
তরল ফেনসিডিল নয়, এবার এসেছে ফেনসিডিল তৈরির পাউডার। কোডিন ফসফেট নামের ওই পাউডারের দাম প্রায় হেরোইনের সমান। মাত্র ৫০ গ্রাম পাউডার দিয়ে তৈরি করা যায় অন্তত ৫০০ বোতল ফেনসিডিল, মাদক রাজ্যে যার খুচরা মূল্য কমপক্ষে দশ লাখ টাকা। মাদক ব্যবসায়ীরা এখন আর বোতলজাত বা তরল ফেনসিডিল না এনে ঝামেলা এড়াতে কোডিন ফসফেট নিয়ে আসছে। এ দিয়ে ঘরে বসেই তারা ফেনসিডিল তৈরি ও বোতলজাত করে তা মাদক মার্কেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের অভ্যন্তরেই ফেনসিডিল তৈরির বিষয়টি অত্যন্ত আতঙ্কের।ধারনা করা হয় বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে ভারতীয় সীমান্তে প্রায় ৩/৪ হাজার ফেনসিডিল তৈরির কারখানা রয়েছে,৮০,র দশকে ফেনসিডিল সর্দি কাশির সিরাপ হিসেবে ব্যবহার হলেও তা এখন পরিপূর্ণ মাদক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের একদল তরুন গবেষক ফেনসিডিলের রাসায়নিক গবেষণা করতে গিয়ে লক্ষ করেন সর্দি কাশির সিরাপ ফেনসিডিল হলেও এটা মাদক হিসেবে প্রচলন হওয়ার পরে রাসায়নিক উপাদানে প্রচুর পার্থক্য রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে যে সব ফেনসিডিল চোরাই পথে দেশে আসে সেগুলো কাশের সিরাপ নয় মাদক হিসেবেই তৈরি করা হয়।শুধু ব্যবসার জন্য আশির দশকের নামটি ধরে রাখা হয়েছে। তাছারা কোডিন ফসফেট দিয়ে দেশেই যে ফেনসিডিল তৈরি হচ্ছে তা সেবন আরো ভয়াবহ। কারন সঠিক রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনা তারা।দেশে তৈরি ফেনসিডিল এর স্বাদ,গন্ধ,ঘনত্ব ভিন্ন বলে ধারণা করছে গবেষকরা।
ফেন্সিডিল গ্রহণের শুরুর দিকে কিছুটা ফেসিনেশন বা আগ্রহ তৈরি করে। এক পর্যায়ে সেটি নির্ভরশীলতা তৈরি করে। এসময় একদিন এটি গ্রহণ করা বাদ দিলে কিছু শারীরিক উপসর্গ তৈরি হয় যা হেরোইনের মতো অন্যান্য মাদকের মতোই। এর মধ্যে শরীরে তীব্র ব্যথা হওয়া, নাক দিয়ে পানি ঝরা, ডায়রিয়া হওয়া, মাংস পেশিতে সংকোচন হয়,যৌনশক্তি নষ্ট হয়,বন্ধাত্ব দেখা দেয়,ফুসফুস ও হার্টে প্রদাহ হয়। এবং এসময় রোগী অস্থির হয়ে পড়ে।
এর পরে থাকছে পর্ব-২।